গ্রীষ্ম বা বর্ষার বাগানে
শোভা বর্ধনে নয়নতারার জুড়ি মেলা ভার। এর আদি নিবাস বাংলাদেশ না হলেও আমাদের গ্রামে-গঞ্জে কিংবা শহুরে বাগানে এদের প্রচুর দেখা যায়। যে কোন
বাগানে একসাথে লাগানো নয়নতারার ঝোপ বেশ সুন্দর দেখায়।
নয়নতারা বর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিত তবে আমাদের দেশের
ট্রপিক্যাল আবহাওয়াতে বেশ কয়েক বছর বেঁচে থাকে। তবে
বেশী ফুল পেতে প্রতি বছর পুরনো গাছ ফেলে দিয়ে নতুন করে চারা লাগানোই ভাল।
ফুলের পাপড়ির ধরন আনুসারে নয়নতারা দুই রকমের হয়ে থেকে, যেমনঃ ভরাট ফুলের নয়নতারা এবং সরু পাপড়ির নয়নতারা।
নয়নতারার রঙের বৈচিত্র্য অনেক। তবে আমাদের
দেশে প্রধানত বেগুনী রঙের নয়নতারা বেশী দেখা যায়, মাঝে মাঝে সাদা
নয়নতারাও পাওয়া যায়।
ইদানীং হাইব্রিডাইজেশনের মাধ্যমে অন্যান্য অনেক রঙের এবং বৈশিষ্টের
নয়নতারা ব্রিড তৈরি করা হয়েছে। এদের অনেকগুলই এখন স্থানীয় নার্সারিগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে। অত্যন্ত
আকর্ষণীয় এসব জাত আপনার বাগানকে মহনীয় করে তুলবে।
হাইব্রিড নয়নতারা ছবিঃ সংগৃহীত |
আমাদের দেশীয় নয়নতারা গাছে ফুলের পরিমান অনেক কম থাকে
অন্যদিকে হাইব্রিড জাতগুলোতে ফুলের পরিমান অনেক বেশী থাকে, তাই ফুলের জন্য লাগাতে চাইলে হাইব্রিড জাতগুলো লাগাতে পারেন। আর টবে
লাগাতে চাইলে কমপ্যাক্ট এবং বামন জাতের নয়নতারা লাগান।
পরিচর্যাঃ
অতিরিক্ত সারযুক্ত মাটিতে ভিঙ্কা
লাগাবেন না । এতে
করে গাছ জোরালো ভাবে বেড়ে উঠবে তবে ফুল আসবেনা।
ভিঙ্কা মোটেও জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারেনা। তাই মাটিতে লাগালে অপেক্ষাকৃত উঁচু
স্থানে লাগান। আর টবে
লাগালে টবের মাটি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত পানি দিবেন না।
এদেরকে অবশ্যই সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে এমন স্থানে লাগাতে
হবে।
ভিঙ্কা সাধারণত চার থেকে ছয় মাস ভাল ফুল দেয়। এরপর গাছ তুলে ফেলে নতুনভাবে লাগাতে হবে।
এদের রোগ বালাই বলতে ছত্রাকের আক্রমন , মোজাইক ভাইরাস , ঢলে পড়া রোগ হতে পারে। রোগাক্রান্ত
গাছ তুলে ফেলাই একমাত্র সমাধান।
নয়নতারা খুবই কষ্টসহিষ্ণু গাছ এবং রোগবালাই খুব একটা হয় না। তাই
শুধুমাত্র নিয়মিত পানি দিলে বিশেষ কোন পরিচর্যা ছাড়াই এরা আপনাকে নিয়মিত ফুল দিবে।